গত ২০ জানুয়ারি, ২০২৫ইং তারিখ বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ডেমরা থানার সন্ত্রাস-দুর্নীতিবিরোধী মতবিনিময় সভা শেষে জুলাই অভ্যুত্থানের ফ্রন্টলাইনার যোদ্ধা ও নিসআ এর আয়োজক কমিটির দায়িত্বশীল হাফিজ নাইম পৃথুর উপর পরিকল্পিত হামলা করে যাত্রাবাড়ীর ‘আশিকুজ্জামান রিদয়’ এর গ্রুপ। হামলার সময় কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক রিফাত রশিদ ও জাহিদ সেখানে উপস্থিত ছিলো, এবং তাদের কাছে শিক্ষার্থীরা সমাধানের জন্য গেলেও তারা সমাধান না করে থানায় জানানো হয়েছে বলে চলে যায়। পরবর্তীতে পৃথু, মুহাম্মদ বাদশাহ,সাব্বির এর উপর হামলাকারীরা হামলা করে গুরতর আহত করলে পৃথুকে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পক্ষ থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মাজহার পরের দিন দুপুর ২ টায় শিক্ষার্থীদের রূপায়ন টাওয়ারে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে যাওয়ার জন্য আহবান জানান উক্ত হামলার ঘটনা সমাধানের জন্য।
পরদিন ২১ জানুয়ারি যাত্রাবাড়ী, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় সহ বিভিন্ন জোনের জুলাই এর আন্দোলনকারীরা দুপুর ২ টায় কেন্দ্রীয় অফিসে গিয়ে কাউকে না পেলে হামলার বিচারের দাবিতে ফেস্টুন সহ কেন্দ্রীয় অফিসের সামনে বসে পরে। এ সময় বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য ‘নাঈম আবেদিন’ এসে কোনোধরনের সমাধানের আলাপে না গিয়ে শিক্ষার্থীদের সাথে বাকবিতন্ডায় এক পর্যায়ে নারী শিক্ষার্থী সহ অনেকের উপর হাতাহাতির মাধ্যমে চড়াও হয়।পরবর্তীতে রিফাত রশিদ সহ কেন্দ্রীয় একটি প্রতিনিধিদল কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে গেলে ঘটনার সমাধান না করে উলটা প্রায় ৩০-৪০ জন শিক্ষার্থীদের মধ্যে দুইজনের রাজনৈতিক পরিচয়কে ইস্যু করে শিক্ষার্থীদের উপর হামলার উস্কানি দেয়। ঘটনাস্থলে আগের দিনের হামলাকারী “আশিকুজ্জামান রিদয়” গং উপস্থিত হয়ে এ হামলা চালায়। হামলার ঘটনায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়াহিদুজ্জামান, ডেমরার শিমুল সহ অনেকে সামনে থেকে হামলা চালায়।
হামলার পরবর্তীতে প্রায় ৯ জন কে ঢাকা মেডিকেলে ভর্তি করা হয়, এছাড়া আরও ১২ জন আহত হয়। বাংলামোটর থেকে ঢাকা মেডিকেলে যাওয়ার পথে উক্ত ঘটনার আহত একজন মাদ্রাসার শিক্ষার্থী মাসুদ কে রিক্সা থেকে নামিয়ে আবারো হামলা করে রিদয় গং।
এ অবস্থায় হামলার শিকার শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে সন্ধ্যা ৭ টার পর সাংবাদিক সম্মেলনে রাতের ভেতর ঘটনার উপযুক্ত বিচার, দোষীদের পদত্যাগ ও গ্রেফতার করার দাবি জানানো হয়। সম্মেলন পরবর্তীতে ঢাকা মেডিকেল থেকে একটি প্রতিবাদী মিছিল রাত সাড়ে ৮ টায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে নিচে অবস্থান নেয়। সে সময় কেন্দ্রীয় কমিটির কেউ উক্ত ঘটনার সমাধান করেনি, তার আগেই অফিসে তালা ঝুলিয়ে চলে যায়।
উলটা হামলার শিকার শিক্ষার্থীদেরকেই ‘হামলাকারী’ ট্যাগ দিয়ে মিথ্যা ও বানোয়াট প্রেস বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয় বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অফিসিয়াল পেইজ থেকে। ঘটনার পরবর্তীতে রাতে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সদস্য সচিব আরিফ সোহেল বোরহানউদ্দিন কলেজের দায়িত্বশীলদের মাধ্যমে রাত ১১ টায় শিক্ষার্থীদের সাথে দেখা করে সমাধানের ব্যাপারে কথা বলার জন্য বসতে চায়। অথচ শিক্ষার্থীদের ১ ঘন্টা বসিয়ে রেখে উনি সেখানে যায় নি।
অন্যদিকে গতকাল থেকেই রিফাত রশিদ, নাঈম আবেদিন সহ বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন এর অনেক দায়িত্বশীল ঘটনায় নিসআ, গণঅধিকার পরিষদের নাম জড়িয়ে হামলাকে জাস্টিফিকেশন করার চেষ্টা আমরা দেখতে পাই। একই সাথে নাঈম আবেদিন PUSAB নামক অনলাইন প্লাটফর্ম থেকে হামলার শিকার শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে আওয়ামী কায়দায় মিথ্যাচার চালায়।
এখানে উল্লিখিত যে নিসআ এর প্রায় সকল সদস্য জুলাই অভ্যুত্থানে সামনের কাতারের যোদ্ধা। গত প্রেক্ষিতে গত ২০ ও ২১ তারিখের হামলার ভুক্তভোগীদের বড় একটি অংশ নিসআ এর সদস্য, এ প্রেক্ষিতে নিসআ এর স্থায়ী পর্ষদের মুখপাত্র ইনজামুল হক গতকালকের হামলার সময় শিক্ষার্থীদের রেস্কিউ করতে গেলে ইনজামুল হকের উপর ও হামলা করা হয়। সার্বিক ন্যাক্কারজনক হামলার ঘটনার দায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন এর কেন্দ্রীয় কমিটি কোনোভাবেই এড়াতে পারে না।
এ ঘটনায় নিরাপদ সড়ক আন্দোলন (নিসআ) এর থেকে হামলার শিকার শিক্ষার্থীদের পক্ষে অবস্থান নেয়া হচ্ছে, একই সাথে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন এর কেন্দ্রীয় কমিটির প্রতি আহবান জানানো যাচ্ছে দ্রুত নিজেদের ভুয়া প্রোপাগান্ডা প্রত্যাহার ও ক্ষমা চেয়ে, দোষীদের বিচারের আওতায় আনার জন্য যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করুন।